Skip to main content

বৃত্ত

বৃত্ত (Circle) ও গোলকের (Sphere) মাঝে কিন্তু পার্থক্য আছে। বৃত্ত হল Two dimensional Shape কিন্তু গোলক হল Three dimensional Shape।এই কারণে আমরা কাগজে বৃত্ত আঁকতে পারি কিন্তু গোলক আঁকতে পারি না। Edwin Abbott এর Flatland: A Romance of Many Dimensions নামে একটা বই আছে। বইটার কাহিনী কিছুটা এইরকম--
একটা গোলক Two dimensional World এর একজন লোকের কাছে আসে। Two Dimensional World এর সব মানুষ Two Dimensional মানে কাগজে আঁকলে যেমন হয় আরকি। গোলকটির আগমন ঘটে পাতলা বাতাস থেকে সৃষ্ট ছোট একটি বিন্দুর দ্বারা যা কিনা Two dimensional , এরপর বিন্দুটা বড় হতে হতে দ্বিমাত্রিক বৃত্তে পরিণত হয় । বৃত্তে পরিণত হওয়ার পর সেটা গোলকে পরিণত হয়ে উপরে উঠতে উঠতে Two Dimensional World থেকে Three Dimensional World এ চলে যায়। চলে যাওয়ার পূর্বে গোলকটি Two-Dimensional লোকটিকে গোলক হওয়ার অর্থ বুঝাতে চেয়েছিল কিন্তু লোকটি অর্থটা বুঝতে পারেনি । কারণ সে উপরে তাকাতে পারছিল না কিংবা পারেনি ,সে আসলে 'উপরে উঠার' বিষয়টাকে মেনে নিতে পারেনি যেহেতু Two Dimensional World এ 'উপর-নিচ' বলতে কিছু নেই। Flatland বইটা থেকে যে সুন্দর শিক্ষাটা নেয়া যায় সেটা হল যে Two Dimensional দুনিয়ার মানুষেরা নিজেদের চারদিকে বৃত্ত এঁকে আত্মহত্যা করে।তারা বৃত্তের মাঝে আটকে যায় কারণ Two Dimensional World এ উপরের ও নিচের রাস্তা বন্ধ থাকে। তাই বৃত্ত থেকে বের হতে তাদের নিজেদেরকে Three Dimension এ আপগ্রেড করতেই হবে। যারা ইসলাম ছাড়া অন্য কোন জীবনব্যবস্থা অনুযায়ী নিজেদের জীবনকে পরিচালনা করছে তারাই হল দ্বিমাত্রিক দুনিয়ার বাসিন্দা। তারা পশ্চিমা সেকুলারদের জীবনব্যবস্থাকে গ্রহণ করে নিজেদের চারিদিকে বৃত্ত এঁকে ফেলেছে। চিন্তার বিষয় হল দ্বিমাত্রিক দুনিয়ার বাসিন্দারা নিজেদের চারদিকে বৃত্ত আঁকার পাশাপাশি অন্যদের চারদিকেও বৃত্ত আঁকার চেষ্টা করছে। একজন মানুষের চারদিকে বৃত্ত আঁকায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন তার জাহেল পিতা-মাতা ও বন্ধু-বান্ধবরা ।জাহেল পিতা-মাতারা মানুষের নিন্দার ভয়ে সন্তানকে বিয়ে দিতে দেরি করে , ছেলেদেরকে দাড়ি রাখতে , মেয়েদের হিজাব করতে বাধা দিয়ে অর্থাৎ ইসলামের বিধি-বিধান পালনে বাধা দিয়ে নিজ সন্তানের চারদিকে একান্ত মনোযোগে বৃত্ত আঁকায় ব্যস্ত। বন্ধু-বান্ধবরা খারাপ কাজে উৎসাহ দিয়ে , 'আরে দোস্ত , সমস্যা নাই তো এতে। এখন না করলে কখন করবি? You only Live Once , Man. " -এই টাইপের কথা বলে বৃত্ত আঁকতে থাকে। জাহেলিয়াতের এই বৃত্ত খুব খারাপ রে ভাই। এই বৃত্তের Gravitational Force খুব বেশি , মানুষকে সহজে উপরে উঠতে দেয় না এই বৃত্ত। তারপরও অনেক মানুষ সিরাতুল মুস্তাকিমের দেখা পায়। তারা তখন উপরে উঠতে আধা জল খেয়ে নামে ।আর তাদের পিতা-মাতা ও বন্ধু-বান্ধবরা যদি জাহেল না হয় তাহলে সেই মানুষের জন্য বৃত্ত থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয় । তবে তারা স্বার্থপরের মত শুধু নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকে না , বৃত্তের মধ্যে আটকে থাকা তাদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদেরকেও উপরে উঠতে শিখাতে চায়। তাদের মধ্যে অনেকে তো উঠতে আগ্রহী হয় কিন্তু অনেকে 'উপর উঠার' কনসেপ্টই বুঝতে পারে না কারণ তাদের চিন্তা-ভাবনা Two Dimensional দুনিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এই বৃত্ত থেকে মুক্তি পেতে অনেকে পুরোপুরি সফল হয় । কিন্তু অনেকে আবার একদিন বৃত্ত থেকে উপরে উঠে তো আরেকদিন আবার বৃত্তের ভেতর ঢুকে যায় কারণ তাদের পিতা-মাতা ও বন্ধু-বান্ধবদের আঁকা বৃত্তটা এতই শক্তিশালী যে সেটা থেকে তারা সহজে মুক্তি পায় না। এই শ্রেণীর মানুষেরা উঠা-নামা করে একধরনের আন্দোলনের সৃষ্টি করে যার ফলে একধরনের Wave এর সৃষ্টি হয় যা কিনা পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া মানুষেরা বুঝতে পারে। দিন যতই এগুচ্ছে বৃত্তগুলো ততই শক্তিশালী হচ্ছে। এটা অবশ্য ঠিক যে এমন এক সময় আসবে যখন দ্বীন পালন করা অনেক কঠিন হবে। রসূলুল্লাহ্‌ (সঃ) বলেন-- " মানুষের উপর এমন এক সময় আসবে , যে সময় তাদের মধ্যে যে দ্বীনকে ধরে থাকবে তাকে সেই ব্যক্তির মত ধৈর্যশীল হতে হবে, যার হাতে থাকে জ্বলন্ত অঙ্গার।" ( সহীহ সুনানে তিরমিযী ২২৬০) আমাদের সময়ে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে পরবর্তীতে না জানি আরো কত কঠিন অবস্থার সৃষ্টি হয় । আল্লাহ্‌ তা'আলা আমাদের দ্বীনের উপর অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন।আমীন।

Comments

Popular posts from this blog

ভূমিকম্প ও ধর্মীয় বিশ্বাস

  ভূমিকম্প হওয়ার পর কতিপয় নাস্তিক ভ্রাতা তাদের স্বভাবমত বিশ্বাসীদের ব্যংগ করেছিল এই বলে যে , “ পূর্বে মানুষেরা বজ্রপাত দেখলে ভয় পেত এবং বজ্রপাতের মেকানিজম না জানায় তারা অজানা বিষয়গুলোর মেকানিজমের ক্ষেত্রে স্রষ্টার কথা উল্লেখ করত। ” ভূমিকম্পসহ যেকোন ধরনের প্রাকৃতিক ঘটনার মেকানিজম সম্পর্কে আমাদের অনেকের ধারণাই হল যে , প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো কিছু Natural Laws মেনে চলে বলে সেগুলো ঘটে। তবে Plausible ধারণা হল এটাই যে প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো মূলত দুইভাবে ঘটতে পারে - ১ )Directional Mechanism এর মাধ্যমে ২ ) Automatic Mechanism এর মাধ্যমে Deist রা বিশ্বাস করে যে স্রষ্টা Natural Laws কে তার নিজের মত কাজ করতে দেয় , ন্যাচারাল প্রসেসে Intervene করেন না।অর্থাৎ এরা পুরোপুরি Automatic Mechanism এ বিশ্বাস করে। কিন্তু একজন মুসলিম এইধরনের ধারণায় বিশ্বাস করে না। বরং স্রষ্টা যেকোন সময় সৃষ্টিজগতে হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। এখন এই দুই মেকানিজম সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু ব্যাখ্যা দেই।এ

The Origin Of Science

১) বিজ্ঞানের প্রাথমিক বিষয়গুলোর উৎস কি ? সব কিছুরই একটা উৎস আছে । বিজ্ঞানেরও আছে।আপনি যদি ডারউইনিস্টদের মত ভাবেন বিজ্ঞান শুধুমাত্র মানবজাতির জানার আগ্রহ থেকে জন্ম নিয়েছে তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। আধুনিক বিজ্ঞানের এত উন্নতির পিছনে মূলত দুইটা কারণ আছে।একটা হল মধ্যযুগের মুসলিমদের দ্বারা বিজ্ঞান চর্চা , আরেকটা হল ইউরোপের বিজ্ঞান বিপ্লব যা কিনা শুরু হয়েছিল Giordano Brunoর মাধ্যমে এবং শেষ হয়েছিল নিউটনের Principia Mathematica দিয়ে।এরপর মানবজাতিকে বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করতে আর বেশি কষ্ট করতে হয়নি। এখানে অবাক করার বিষয় হল